CSE তে ভর্তি হতে কি কি করতে হবে ?
Introduction:
2024 সালে এসে আপনি 100 জন ছাত্রকে যদি Randomly জিজ্ঞেস করেন যে ক্লাস 12 এর পরে তোমরা কোন সাবজেক্টে ভর্তি হবে তার মধ্যে অর্ধেক এর বেশি ছাত্র বলে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বা সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং।
আপনি নিজেও যদি এই গ্রুপের একজন হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনাকে বলবো কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং আপনার ক্যারিয়ার এর জন্য ভয়ঙ্কর ভাবে নষ্ট করে দিতে পারে এবং আপনার স্বপ্নের চাকরি স্বপ্নই থেকে যেতে পারে!
অথবা এটি আপনার জীবনকেও বদলে দিতে পারে।
যেমন আমার জীবন বদলে দিয়েছে।
মানে আমি আপনাকে বলতে চাচ্ছি CSE তে পড়ালেখা করে ভালো ক্যারিয়ার এর বদলে উল্টো আপনাকে বেকারও থাকা লাগতে পারে। আমি আপনাকে বলবো আপনার কি কি করলে আপনি unsuccesfull হতে পারেন আবার কি কি করলে আপনি একজন সফল সফটওয়ার ডেভলপার বা আপনার স্বপ্নের কাজ পেতে পারেন।
তো পুরো ব্লগ পোস্ট টা মন দিয়ে পড়ুন আসা করছি আপনার অনেক হেল্প আসবে।
আমাদের দেশের ম্যাক্সিমাম 12 পাস ছাত্র ছাত্রীরা কোনো প্রকার বিশ্লেষণ ছাড়াই হুট করে Computer Science Engineering তে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে কারণ তার বন্ধু বলেছে ভর্তি হতে অথবা পড়ার ফ্রিল্যান্সার বড়ভাই বুদ্ধি দিয়েছে cse তে ভর্তি হতে আবার এমনটিও হতে পারে ইউটিউব এ কোটি টাকার ইনকাম দেখে এই সাবজেক্টে এ সে ভর্তি হতে চাইছে।
এখন আপনার মধ্যেও যদি এর কোনো একটা symptoms থাকে তাহলে আপনার বুঝবেন আপনি ধিরে ধিরে একটা ট্র্যাপ এর মধ্যে পরে যাচ্ছেন।আর আপনাকে যে university গুলো পড়াবে তারা ট্র্যাপ এর ঠিক একটু সামনে অনেক বড়ো দোকান খুলে বসে আছে।টাকা আছে বলেই কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ভর্তি হলেই আপনার চাকরি পেয়ে যাবেন ব্যাপারটা এই রকম না। ভর্তি হবার আগে এই রিলেটেড চাকরির বাজার নিয়ে আপনার একটা আইডিয়া তৈরি করতে হবে।
আপনি হয়তো দেখেছেন cse রিলেটেড চাকরি আছে মাত্র 10 টা কিন্তু এইটা দেখেননি 10টা চাকরির পেছনে 1000 টা CV অলরেডি জমা হয়ে গিয়েছে। এইটা কিন্তু খুবই সাধারণ একটা সাপ্লাই চেইন এর হিসাব, মানে যখনই সাপ্লাই বেশি হবে বুঝে নিবেন সেখানে ডিমান্ড অনেক কমে গিয়েছে।
তো এখন প্রশ্ন হচ্ছে হঠাৎ করে ডিমান্ড এমন কমে যাওয়ার কারণ কি ? কারণটা হচ্ছে "করোনা"। করোনার আগে ও এক বুম ছিল যখন প্রতিটা কোম্পানি সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং hire করার জন্য বসে ছিল কিন্তু মহামারী শেষ হয়ে গেলে একটা ইকোনমিক ডাউনটাইম শুরু হয়।
সাথে সাথেই আরও দুই তিনটা মেজর যুদ্ধ আমার দেখতে থাকি রাশিয়া, ইউক্রেন, চায়না, তাইওয়ান তাদের মধ্যে যে একটা war সিচুয়েশন ক্রিয়েট হয় আছে এইজন্য পুরো পৃথিবী তে একটা uncertain এবং একটা অস্থির মুহূর্ত পার করছে আর এই অস্থির মুহূর্তে কোনো startup এ বিনিয়োগ হচ্ছে না। Startup এ কম বিনিয়োগ হওয়া মানে কিন্তু চাকরির নাম্বার গুলো কিন্তু আস্তে আস্তে কমে যাওয়া।
কারণ startup গুলির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে Technical Software products। যেই product ডেভেলপ করতে আপনার দরকার হচ্ছে software developar। আবার রিসেন্টলি elon mask টুইটার আবিষ্কার করে যে lay off cycle শুরু করেছে এই lay off cycle এর কারণে দুনিয়ার প্রত্যেকটা বড় বড় কোম্পানি প্রতিনিয়ত তাদের টিম থেকে সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার বাতিল করছে। যার কারণে আমরা দেখছি চেইন রিয়াকশন এর মত বছরের পর বছর lay off কালচারটা ডেভেলপ করেছে।
আর এই পুরা ডাউনফল কালচার এর উপর একবারে শেষে পেরেক টা মেরে দিয়েছে Artificial intelligence. এখন আপনি স্মার্টলি কোডিং শিখতে পারলে আপনার জন্য সফটওয়ার বানানো অনেক সহজ,দ্রুত এবং কমখরচ পূর্ণ আর সেই জন্যই শুধু মাত্র কোডিং স্কিল নিয়ে আপনি বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারবেন না। কোডিং এর সাথে আপনার আরও বেশ কিছু স্কিলস্ এর প্রয়োজন। তারমানে আজকে থেকে 10 বছর আগে চাকরির বাজার, চিন্তাভাবনা, Studyplan, study curriculum এবং overall যে মাইন্ডসেট, এই জিনিসটা এখন প্রায় মুছে গিয়েছে বলা যেতে পারে।
আর এখন কিন্তু compitition CSE কেনো যেকোনো সাবজেক্টে একশো গুণ হয়ে গিয়েছে তা আমার প্রতিদিন জীবনে দেখতে পাচ্ছি। অনেকের ধারণা থাকে CSE তে ভর্তি হলেই ইঞ্জিনিয়ারিং এর কোনো একটা সার্টিফিকেট হলেই যে কোনো একটা চাকরি সে পাবেই এই ধারণা যে এখন 2025 সালে আপনি যে কতটা ভুল ধারণ সেটা ভাঙবে আপনার ইউনিভার্সিটির শেষ বছরে।আর ঠিক এই জন্যই তাদের অনেক বছর বেকার থাকতে হয়।
তো এতক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনাকে এটাই বুঝাতে চেয়েছি যে cse তে ভর্তি হওয়ার আগে আপনি যদি এগুলো না জেনে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই যদি আপনি ভর্তি হন তাহলে CSE আপনার ক্যারিয়ার এর জন্য একটা খুব খারাপ অবস্থা হতে পারে।
আপনি এতদূর পর্যন্ত পড়ে আপনি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে নেগেটিভ চিন্তা করতে পারেন, কিন্তু আমি একথাও আগে বলেছি কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পুরোপুরি ভাবে আমার জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে।
তো এখন আমি আপনাদের কে অনেকগুলি টিপস শেয়ার করবো যেগুলো মেনে চললে আপনি যেকোনো ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে বা CSE পড়লেও সফল হতে পারবেন বলে আমি মনে করি।
তো আপনি একবার 2লাখ টাকার মোটরসাইকেল কিনতে গেলে কতো বার টেস্ট ড্রাইভ করতেন ? আপনার দাদার যদি bike থাকে তাহলে তার টা আপনি চালান আপনার বাবার থাকলে তারটা আপনি চালান এবং প্রতিবেশী বা বন্ধুবান্ধব এর থেকে তো চালান ই তাই তো!
তো যখন 10 লক্ষ টাকা খরচ করে আপনি একটা ইউনিভার্সিটি টা ভর্তি হবেন আপনার জীবনের সবথেকে মূল্যবান চারটা বছর আপনার ইউনিভার্সিটি কে দেবেন এবং বাবা মায়ের জমানো সেভিং 10 লক্ষ টাকা দিয়ে আপনি সেখানে পড়ালেখা করেন আপনার জীবনের সবথেকে মূল্যবান সময় এবং এত টাকা ইনভেস্ট করবেন।
এতো টাকা ইনভেস্ট করার আগে আপনার কিছু analysis এর দরকার আছে। Analysis বলতে এখানে প্রত্যেকটা ইউনিভার্সিটি তে একবছর পড়ে পড়ে তো আপনি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়া সম্ভব না। তো আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস করুন কেনো আপনি ইউনিভার্সিটি যে ভর্তি হতে চাইছেন শুধুমাত্র কে একটা সার্টিফিকেট এর জন্য ? সেটা তো নয় তাই না সার্টিফিকেট তো আপনি এমনই বানিয়ে নিতে পারেন কম খরচ। যাই হোক তো এখন কি কি করা লাগবে যাতে করে আপনার 4 টি বছর নষ্ট না হয় এবং আপনি আপনার ক্যারিয়ার এ সফল হতে পারেন।
University Selection:
শুধুমাত্র কোডিং শেখার জন্য কি আপনি ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হবেন। উত্তর হলো না। কারণ আপনি কোডিং দুই থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে বাড়িতে বসে শিখে নিতে পারেন এমনকি কিছুদিনের মধ্যে আপনাকে সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট ও শিখিয়ে দিচ্ছে অনেক অনলাইন ইনস্টিটিউট।
তাহলে আপনি ইউনিভার্সিটিতে যাবেন কেনো এবং কোন ধরনের ইউনিভার্সিটিতে যাবেন ! কোনো ইউনিভার্সিটি আপনাকে চাকরির নিশ্চয়তা দেবে না। পৃথিবীর কোনো সাবজেক্ট আপনাকে চাকরির নিশ্চয়তা দেবে না।
ইউনিভার্সিটি গুলো তৈরি করা হয়েছে Academic Purpose Solve করার জন্য Not because যে আপনাকে তারা চাকরি দেবে এটা তারা Promise করে বসে আছে। তাই আপনার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে দেখবেন 4 বছরের মধ্যে কোন ইউনিভার্সিটি টা সুন্দর মতো আপনার প্রস্তুত করে দিতে পারবে এবং কোন ইউনিভার্সিটি তে আপনার সুন্দর একটা পরিবেশ আছে। কাদের Faculty লিস্টিং ভালো। এবং যেখানে গেলে আপনি সুন্দর একটা নেটওয়ার্ক পাবেন। ইউনিভার্সিটি আপনাকে একহাজার দুই হাজার ছাত্র ছাত্রীর একটা নেটওয়ার্ক দেবে সাথে আপনাকে একটা ভালো Pair গ্রুপ দেবে আপনার একটা circle দেবে, বন্ধু দেবে। যে নেটওয়ার্ক, বন্ধু বা ফ্যামিলি টা আপনার পুরা লাইফটাইম কাজে দেবে। সো 10 লক্ষ টাকা দিয়ে আপনি কোর্স দিচ্ছে না তার সাথে আপনার একটা সুন্দর পরিবেশ নেটওয়ার্ক দিচ্ছে। এই জিনিস গুলো যেই ইউনিভার্সিটি তে ভালো চোখ বন্ধ করে সেই ইউনিভার্সিটি টা আপনি ভর্তি হতে পারবেন। সেখানে 10 লক্ষ টাকা খরচ করতে কোনো সমস্যা নেই।
এখন এই জিনিসগুলো চেক না করে আপনি যদি কোনো ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হয়ে যান তাহলে কিন্তু আপনার সফল হওয়ার পরিকল্পনা কিন্তু অনেক কমতে থাকে।
SUBJET CHOOSE:
এবার টেস্ট ড্রাইভ এর ইস্যু হচ্ছে আপনি কোন সাবজেট এ ভর্তি হবেন সেটা নিয়ে। দেখুন আপনি আসলে কোডিং পারবেন কি পারবেন না এটা আগে ঠিক করতে হবে। 10 লক্ষ টাকা খরচ করার আগে আপনি এইটার পিছনে একটি লেগে থাকেন তিন চার হাজার টাকা দিয়ে দু একটি পেইড কোর্স করুন।
আপনি আপনার সাবজেক্ট ফ্রী তেও পড়তে পারেন ইউটিউব এর মাধ্যমে। তো আপনি নিজে থেকে ইউটিউব ভিডিও দেখে বোঝার চেষ্টা করুন যে আপনি আসলেই কোডিং পারবেন কি পারবেন না। কোথায় আপনার প্রবলেম হচ্ছে কি আপনি ভালো লাগছে এগুলো আগে চেক করে নিন।
Conclusion:
তো আপনি পুরোপুরি বুঝে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে ভর্তি হন। উপরে যে সমস্ত পয়েন্ট গুলো আলোচনা করলেন এগুলো সব কিছু মেনে চলুন আলটিমেটলি আপনি সফল হবেন এটা আসা রাখছি। চলুন সবাইকে ধন্যবাদ এতক্ষণ মন দিয়ে পড়ার জন্য।
কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ কি কি সাবজেক্ট পড়তে হয় জানতে চাইলে এটা পড়ুন ।